মাহমুদ শরীফ, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
অস্বস্তির গরমে ত্রাহি অবস্থা মানুষের, কোথাও যেন স্বস্তি নেই। চলমান বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসও শান্তির পরশ বুলাতে ব্যর্থ। উদ্ভূদ পরিস্থিতিতে শরীর ঠাণ্ডাকর খাদ্যের কদর বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি, তাল শাঁস তাদের একটি। আর এ শাঁসেই প্রশান্তির অনুসন্ধান করছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নানা পেশা আর বয়সের মানুষ।
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে উপজেলায় তাল শাঁসের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুন। শহর ও গ্রামের হাট-বাজারে চোখে পড়ছে তাল শাঁস বেচাকেনা। এছাড়াও বিভিন্ন সড়কের পাশে বড় গাছের নিচে ও ভ্যানের উপর ভ্রাম্যমাণ তাল শাঁস বেচাকেনার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। রোদে অতিষ্ঠ মানুষ একটু স্বস্তির আশায় খাচ্ছে শাঁস, অনেকে নিয়েও যাচ্ছে বাড়িতে।
কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাল শাঁস বিক্রি করছেন ইউনুস আলী। তিনি জানান, প্রতিটি শাঁস ৫ টাকায় বিক্রি করছি, যা গত বছরে চেয়ে দুই-তিন টাকা বেশি। প্রতিদিন পনের'শ টাকার তাল শাঁস বিক্রি করি। এতে পাঁচ-সাত‘শ টাকা লাভ থাকে। একটি তাল থেকে দু’টি বা তিনটি শাঁস হয়। তিনি বলেন, গ্রাম থেকে কাঁচা ও কচি তাল কিনে আনতে হয়। তালের সংকট থাকায় এর দাম বেড়েছে। উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মোহননগর গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস বছরের অন্যান্য সময় ইটভাটায় কাজ করলেও এখন তারা চার বন্ধু মিলে তালের শাঁস বিক্রি করছেন। চাহিদা থাকায় বেচা-বিক্রি ভালো বলে ইউনুস আলী বেশ খুশি। চাদপুর বাজারের তাল শাঁস বিক্রেতা স্বপন শেখ বলেন, তিন শাঁসের এক তাল ১২ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। তীব্র গরম থাকায় তালের চাহিদা বেশ ভাল। তিন থেকে চারশ টাকা দরে শাঁসের জন্য তাল গাছ কিনি। প্রতি গাছে ৭ থেকে ৮০০ পিচ তাল পাওয়া যায়। তাল শাঁস বিক্রির মৌসুম ছাড়া তিনি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান।
তাল শাঁসের পুষ্টিগুন ও উপকারিতার প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আকুল উদ্দিন বলেন, এটা সুস্বাদু। অন্যদিকে কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকে, যা দেহের পানি শূন্যতা পূরণ করে। ফলে জ্যৈষ্ঠের এ গরমে হাট-বাজারে বেশ কদর বেড়েছে তাল শাঁসের। তিনি সাধ্যমতো খাওয়ার পরামর্শও দেন।
মাহমুদ শরীফ/এমকে