দেশের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে না পড়লেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ঢুকে যায় সুন্দরবনের বাংলাদেশের অংশে।এতে সেখানকার জীববৈচিত্র্যে বিরুপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইয়াসের প্রভাবে ম্যানগ্রোভ এ বনের প্রায় ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।প্রাথমিক এ হিসাবের কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে বন বিভাগ। এদিকে ক্ষয়ক্ষতির চুড়ান্ত পরিমাণ নির্ণয়ে ৪টি পৃথক কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ।
তথ্যানুযায়ী ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪টি মৃত ও ২টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পর্যটন স্পট কটকা, কচিখালী, হিরন পয়েন্ট দুবলা, আলোরকোল, করমজল ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে কিছু হরিণ, বানর, অজগরসহ বিভিন্ন প্রাণী। বনের বিভিন্ন টহল ফাঁড়ি, স্টেশনের ১৯টি জেটি, দুটি গোলঘর, একটি ফুট রেইল, ওয়াচ টাওয়ার, চারটি স্টাফ ব্যারাক ও একটি রেস্ট হাউজের পাশাপাশি দুটি অফিসের রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। ডুবেছে বনের মিষ্টি পানির পুকুর ও জলাশয়, আবাসস্থলের পরগাছা-লতাপাতা নষ্ট হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে বন্যপ্রাণীদের খাদ্যাভাবের শঙ্কা। ইয়াসের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট বেশি পানিতে প্লাবিত হয় সুন্দরবনে।
প্রসঙ্গত, তথ্যানুযায়ী এ বনে ৩১ শতাংশের জলভাগে ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল রয়েছে। প্রধান উদ্ভিদ সুন্দরীসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড, ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী,৩১৫ প্রজাতির পাখি রয়েছে। ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গ কিলোমিটার জলভাগের নদ-নদীতে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার রয়েছে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনবসতির প্রাকৃতিক প্রাচীর হিসাবে কাজ করে এ বন।
এমকে