চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রামে ব্যাংকার মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার তদন্তভার ডিবি থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। মোরশেদের স্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়। রোববার (৩০ মে) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ডিবি উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মইনুর রহমান। ডিবির আগে মামলাটি সিএমপির পাঁচলাইশ থানা তদন্ত করেছে, এরপর ডিবিতে নেয়া হয়। ডিবি পুলিশ তদন্তভার পেয়ে আসামি পারভেজ ইকবালের প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. আরাফাতকে গ্রেফতারও কর।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর এবং নথিপত্র বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে পরিদর্শক কামরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
গত ৫ মে মোরশেদ চৌধুরীর স্ত্রী ইসরাত জাহান চৌধুরী এ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কার্যক্রমে অনাস্থার কথা জানান।মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তরের আর্জি জানানো হয়। সেই অনুযায়ী মামলার তদন্ত পিবিআইর হাতে গেলো।
প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল ভোরে নগরের পাঁচলাইশ থানাধীন মিমি সুপার মার্কেট সংলগ্ন হিলভিউ আবাসিক এলাকায় নাহার ভবনের ছয়তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পূর্ব মাদারবাড়ির বাসিন্দা আব্দুল মোমিন চৌধুরীর ছেলে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে জাবেদ ইকবাল, পারভেজ ইকবাল এবং রাসেল নামের এক ব্যক্তির নামে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন ইসরাত জাহান চৌধুরী। এছাড়া মোরশেদের আত্মহননের জন্য দায়ীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
উল্লেখ্য, মোরশেদ চৌধুরী তার ফুফাতো ভাই জাবেদ ইকবাল ও পারভেজ ইকবালের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নেন। সেই ঋণের বিপরীত ৩৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানান ইসরাত জাহান। এরপরও আরো টাকা পাওনা রয়েছে বলে চাপ প্রয়োগ করা হয়। অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে না পেরে গত ৭ এপ্রিল মোরশেদ চৌধুরী নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে তিনি একটি সুইসাইড নোট লিখে যান।
সুইসাইড নোটে মোর্শেদ উল্লেখ করেন ‘আর পারছি না। সত্যি আর নিতে পারছি না। প্রতিদিন একবার করে মরছি। কিছু লোকের অমানুষিক প্রেসার আমি আর নিতে পারছি না। প্লিজ, সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আমার জুমকে (মেয়ে) সবাই দেখে রেখো। আল্লাহ হাফেজ।’
দিলীপ কুমার তালুকদার/এমকে