বাড়ছে সংক্রমণ, স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনীহা

০৯ জানুয়ারী ২০২২

চলতি বছরের শুরু থেকেই দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। গত তিন দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। শনাক্তের হার গত ডিসেম্বরেও দেড়-তিনের মধ্যে থাকলেও গত দুই দিনে ছাড়িয়েছে পাঁচ। আগের চেয়ে সংক্রমণ চারশ’গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন  স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যেই বাড়ির বাইরে মুখে যথাযথভাবে মাস্ক পরাসহ বেশ ১৫ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকারর স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে অনীহা দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। মুখে অনেকেই মাস্ক পরলেও সামাজিক দুরুত্বের বালাই নেই অধিকাংশ জায়গায়। এতে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ থাকছে।

এদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা- বিশেষত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে তারা। সেই সঙ্গে জনসমাগম হয় এমন সব আয়োজন বন্ধেরও সুপারিশ করেছে।   

এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, করোনার অতিসংক্রমণশীল ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে ভারতে ডেল্টার মতোই একই গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। একদিনে  শনাক্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত মে মাসের পর একদিনে এত বেশি রোগী আর শনাক্ত হয়নি।

বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই ওমিক্রন ধরণ শনাক্ত হয়েছে ২১ জনের, তারা সবাই ঢাকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, ওমিক্রনের গুচ্ছ সংক্রমণ (ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন) হয়েছে ঢাকায়। সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা না নিলে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে সময় নেবে না।  

ওদিকে ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে গত ৩ জানুয়ারি আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে এ তথ্য জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন,  আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্তগুলো প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে।

সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঘরেই বাইরে, দোকানপাট-বাস-ট্রেন-মসজিদসহ সব জায়গায় সঠিক ভাবে ‍মুখে মাস্ক পরা, না পরলে জরিমানা করা হবে। গণপরিহনে নির্ধারিত আসনের চেয়ে কম যাত্রী বহন করা ও সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সংখ্যা সীমিত রাখা। হোটেল-রেস্টুরেন্টে সনদ ছাড়া ক্রেতাদের সেবা বন্ধ থাকবে।  

বিশ্লেষকরা বলেছেন, শুধু  সিদ্ধান্ত নিলে ও এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করলেই হবে না, সেগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। সেক্ষেত্র কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ দ্রুত আমলে নিতে হবে। না হলে গতবারের মতোই লকডাউন (কঠোর বিধিনিষেধের) মুখোমুখি হতে পারে দেশকে। আর সে রকম পরিস্থিতি হলে খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে আসবে গতবারের মতো স্থবিরতা। তাই আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া ও সেটা কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর