তিন দিনের রিমান্ডে সিরিয়া ফেরত জঙ্গি নেতা লালু

১২ জুন ২০২১

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

আনসার আল ইসলামের আইটি বিশেষজ্ঞ সিরিয়া ফেরত জঙ্গি নেতা শাখাওয়াত আলী ওরফে লালুকে (৪০) তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের করা পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় আহলে হাদীস জামে মসজিদের সামনে থেকে তাকে আটক করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এ সময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন জিহাদি কাগজপত্র, একটি পাসপোর্ট, একটি মোবাইল ফোন, একটি ট্যাব, একটি মিনি নোট বুক জব্দ করা হয়। শাখাওয়াত আলী ওরফে লালু খুলশীর ওয়াসা মোড়ের এসএইচ পেট্টোল পাম্প এলাকার শমসের আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট জানায়, শাখাওয়াত আলী ওরফে লালু ২০১২ সাল থেকে তার ভায়রা আরিফ এবং মামুনের অনুপ্রেরণায় জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়। তাদের সংগঠনের নেতা মোয়াজ (চাকুরিচ্যুত মেজর জিয়া), চট্টগ্রাম নগরীর মনসুরাবাদ এলাকার হুজুর শফিক ও চট্টগ্রাম লালখান বাজার এলাকার এসির দোকানের কর্মচারী ওমর ফারুকের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম’র সদস্যদের সংগঠিত করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। ইউনিটটির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লালু জানায়, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বিন্যাসে বিভিন্ন প্রকার জিহাদি কার্যক্রম প্রচারের কাজে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতেন তিনি। পরবর্তীতে জিহাদে অংশগ্রহণ করতে বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে তুরস্ক যান। তুরস্ক থেকে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়াতে প্রবেশ করে ছয় মাস ‘হায়াত তাহরীর আরশাম’ এর নিকট থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ‘ইদলিব’ এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে সিরিয়া থেকে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্কে হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশ করেন। এর পর ইন্দোনেশিয়া থেকে শ্রীলংকা হয়ে পুনঃরায় ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে বসবাস করেন। ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকালে জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। চলতি বছরের ২২ মার্চ বাংলাদেশে এসে জঙ্গি সংগঠনের পক্ষে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বিঘ্ন, বাংলাদেশেকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি ও সন্ত্রাসী কার্য ঘটানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বিন্যাসে প্রচারের কাজে জড়ান।

দিলীপ কুমার তালুকদার/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর