গঠনের পরদিনেই প্রথম বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটি। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানী ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে এ বৈঠক হবে। বৈঠকটি ডেকেছেন কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশসহ প্রস্তাব দেওয়ার মতো যোগ্যদের নাম চূড়ান্ত করার উদ্দেশ্যে বৈঠকে বসছে তারা।
এর আগে সদ্য পাস হওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন অনুযায়ী ছয় সদস্যের এ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন- ২০২২ মোতাবেক দায়িত্ব পালন করবে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মুলত এ কমিটির কাজ হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দু’জন এবং অন্যান্য কমিশনার হিসেবে ৮ জনের নাম সুপারিশসহ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করা। সুপারিশ চূড়ান্ত করতে ১৫ দিন সময় পাবেন তারা। সুপারিশসহ প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। আইনে প্রধানসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতা উল্লেখ আছে।
সার্চ কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক এস এম কুদ্দুস জামান, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহরাব হোসাইন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী এবং রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক হলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথা সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এদিকে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। ফলে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও সময় থাকছে সদ্য গঠিত সার্চ কমিটির। অবশ্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আগেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন কমিশন গঠন করতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে কারো নাম সুপারিশের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া যোগ্যতাগুলো হলো— তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স ন্যূনতম ৫০। সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে- আদালত অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করলে। দেউলিয়া হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেলে। কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিলে কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে। নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২–এর অধীনে কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলে। আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না- এমন পদ ছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে।