আমদানির গমে গজিয়েছে চারা !

০১ জুলাই ২০২১

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া
বগুড়ায় ভারত থেকে আমদানি করা গমের বস্তায় গজিয়েছে গমের চারা। রেলপথে আনা এ গম বুধবার সকাল থেকে সান্তাহার জংশন স্টেশনের কলেজ রোড এলাকায় খালাস করা হচ্ছে। অভিযোগ ওঠেছে পোকায় ধরা নিম্নমানের গম আমদানির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমদানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আকরাম হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে ভেজার কারণে কিছু গমের বস্তায় চারা গজিয়েছে, বাকি সব গম ভাল। এ গম আমদানি করছে জেলার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের বহুমূখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আজমেরী গ্রুপ।

জানা গেছে, এ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় গম দিয়ে আটা, ময়দা, সুজি ও ভুসি উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে। বর্তমানে দেশীয় গমের দাম চড়া এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা না মেটায় ভারত থেকে গম আমদানি করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ গমের বস্তা ফুটো করে বের হয়েছে গমের চারা। অনেক বস্তার গম পঁচে বস্তাসহ নষ্ট হয়ে গেছে। গম বোঝাই ৪২টি ওয়াগনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিকটন গম এসেছে জংশন ষ্টেশন সান্তাহারে। সেগুলো দ্রুত গতিতে খালাস করে ট্রাক যোগে ওই প্রতিষ্ঠানের মিল ও গুদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, তারা আজমেরী গ্রুপের আজমেরী আটা, ময়দা ও সুজি বিক্রয় করছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু পোকা খাওয়া গম আমদানির কথা লোক মুখে শুনে এসব পণ্য বিক্রি করা নিয়ে শংকিত রয়েছেন। খালাস এলাকায় থাকা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আকরাম হোসেন আরো জানান, আজমেরী গ্রুপের মালিক অপরিচিত কারো ফোন ধরেন না বা কথা বলেন না।

এদিকে আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে পাওয়া গম আমদানি সংক্রান্ত কাগজপত্র অনুসন্ধান করে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মান নির্ধারণ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র মেলেনি।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রব্বানী বলেন, আমদানি করা ওই গম বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই, এটি বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের বিষয়। বিএসটিআই’র বগুড়া কার্যালয়ের পরিদর্শক জুলফিকার আলী বলেন, গম থেকে উৎপাদিত খাদ্য আমরা (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস টেস্টিং ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে) পরীক্ষা করে সনদ দেই। গম দেখভালের দায়িত্ব জাতীয় ভোক্ত অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের। বগুড়া জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক রাকেশ সাহার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তিনি আরোও বলেন, দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা পণ্য ও তথ্যাদি দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করবেন।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর