তবে কী কারাগার ও হাসপাতালের প্রিজন সেলে নিজেদের ইচ্ছে মতোই চলছেন ‘প্রতাপশালী’ ও ‘প্রভাবশালী’ বন্দিরা।ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনের জুম মিটিংয়ের ঘটনা প্রকাশের পর সামনে এসেছে এ প্রশ্ন। এর আগে কারাগারের ভেতরেই নারী সঙ্গ উপভোগ করেন আরেক ‘প্রতাপশালী’ বন্দি হলমার্ক গ্রুপের জিএম। এতে এ ধরণের বন্দিদের কারা বিধান মানার বিষয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর্থিক চুক্তি ছাড়া এ ধরণের বন্দিদের নিজেদের ইচ্ছে মতো চলার সুযোগ নেই বলে আলোচনা হচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে। এর বাইরে বন্দির জেল পালানো ঘটনাও ঘটেছে, কারাগারের ভেতরে মোবাইল ব্যবহার করার অভিযোগ তো আছেই। এতে কারাগারের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে তদন্ত কমিটি ও এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কারা কর্মকর্তা ও রক্ষীদের প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্তের মধ্য দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সামাল দেয়া হয় উদ্ভূত পরিস্থিতি। কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হলেও বাকিদের ক্ষেত্রে তেমনটা ব্যবস্থা নেয়া হয় না। এ ধরণের অপরাধ প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার ঘাটতিকেই দুষছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা।মনে করেছেন, এ কারণেই এ ধরণের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে থাকা অবস্থায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন একাধিকবার জুম প্লাটফর্মে মিটিং করেন। কারা সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে ইন্টারন্ট সংযোগসহ অন্যান্য সহায়তা নিয়েই এ মিটিং হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসেন কারা কর্তৃপক্ষ।গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের কমিটি, সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে এ কমিটিকে। হাসপাতালে কর্মরত কারারক্ষীদের মধ্যে থেকে ১৭ জনকে ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের চার জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। গ্রাহকদের ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ডেসটিনির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে ২০১২ সালে গ্রেফতার হন রফিকুল আমীন। গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন।তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের দুটি মামলা বিচারাধীন।
এর আগে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে এক নারী সঙ্গ উপভোগ করেন বন্দি হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ । ৬ জানুয়ারির এ ঘটনায় কারাগারটির দুই কর্মকর্তার সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। কারাগারের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশনের (সিসিটিভি) ক্যামেরায় ঘটনাটি ধরা পড়ে ও পরে জানাজানি হয়। এ ঘটনায় আলাদাভাবে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে জেলা প্রশাসন ও কারা কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। এর মাঝে চট্রগ্রাম কারাগার থেকে পালিয়ে যায় হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন। পরে নিজের এলাকা নরসিংদী থেকে সেই বন্দিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনা জেলার ডেপুটি জেলারকে সরিয়ে দেয়া হয়। দুই কারারক্ষীকে বরখাস্তের পাশাপাশি একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হয় তিন সদস্যের একটি কমিটিকে।
এমকে