স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের স্রোতে মানুষ আর মানুষ

১৬ জুলাই ২০২১

ক’দিন পরেই ঈদুল আজহা, ঈদ ঘিরে শিথিল করা হয়েছে চলাচল ও ঘরের বাইরের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ।এ সুযোগে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে সাধারণ মানুষ।ঈদ উপলক্ষে প্রিয়জন ও স্বজনদের জন্য গাদাগাদি করে সারছেন কেনাকাটা, ঠেলাঠেলি করে ফিরছেন বাড়ি।এ ক্ষেত্রে পুরোপুরি মানা হচ্ছে না করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি। সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না কোরবানির পশুর হাটে ও গণপরিবহনে।

বাড়ির বাইরে মানুষের একট অংশ মাস্ক পরলেও বেশিরভাগের মুখ থাকছে খোলা। সামাজিক দুরত্বও গেছে উবে। ফলে শিথিলতার মেয়াদে মানুষের খামখেয়ালিপনায় ভয়াবহ রূপ নিতে পারে করোনার সংক্রমণ। বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তার আগে বুধবাধ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিথিলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

গত মাস থেকেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করা করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চলতি মাসের শুরুতেই এ বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- বিধিনিষেধের মেয়াদকালে জরুরি সেবা, পণ্যবাহী যান ও রিকশা ছাড়া সরকারি বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটসহ সবকিছু বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে উৎপাদন সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানা। জরুরি সেবা সংশ্লিষ্টরা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ কোনাভাবেই বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। খুব জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলেও অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।

এ দিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও সেই বিধি মানছেন না গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা। অথচ ঠিকই আদায় করছেন শর্তযুক্ত ভাড়া। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ।

বিধিনিষেধ শিথিলের শুরু দিনে পাটুরিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালন করতে বাড়ি ছুটছে মানুষ। ফেরি ও লঞ্চে পার হওয়া মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এ রুটে যাতায়াত করে সাধারণত। গণপরিবহন চলাচলের শর্তে বলা হয়, মোট আসনের ৫০ শতাংশ ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহনের করতে হবে। লোকসান এড়াতে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আদায় করা যাবে। এর চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা যাবে না। কিন্তু এসব শর্তকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে চলছেন গণপরিহনের চালকসহ তার সহকারিরা। সব আসনে তোলা হচ্ছে যাত্রী, এমনকি দাঁড়িয়েও যাচ্ছেন যাত্রীরা।। অথচ ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আদায় করছেন।

এদিকে বিধিনিষেধ শিথিল করায় অনেক দিন পর পর শপিংমল ও দোকানপাট খোলায় মানুষ ছুটছেন বাজারে ও শপিং মলে। বেশিরভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েই কেনাকাটা সেরেছেন ক্রেতারা। কেউ করছেন ঈদের কেনাকাটা, কেউ কিনছেন সাংসারিক জিনিসপত্র। ক্রেতাদের চাপ বাড়ায় দোকানিদের পক্ষে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।ফলে তারা ছেড়ে দিয়েছেন হাল। অনেক শপিংমলে ঢোকার সময় শরীরের তাপমাত্রা মাপা হলেও ভেতরের চিত্র সাধারণ মার্কেটের মতোই।

অন্যদিকে শিথিলের মেয়াদকালে সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনে করছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আশা করি সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি কঠোর বিধিনিষেধ আরো ১৪ দিন বাড়ানোসহ কোরবানির পশুর হাট বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে।যদিও শিথিলতার প্রজ্ঞাপনেই শিথিলতার মেয়াদ শেষে সারাদেশে ১৪ দিন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।

 

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর