দেশে রীতিমতো তাণ্ডব চলছে করোনার। প্রতিদিন-ই লম্বা হচ্ছে লাশের সারি। চিরদিনের মতো স্বজন হারানোয় মাতম চলছে সংশ্লিষ্ট পরিবারে। অন্যদিকে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে আগের চেয়ে রোজগার কমে গেছে নিম্ন আয়ের পরিবারে, বিশেষত পরিবহন সংশ্লিষ্টদের। এতে চাপা হাহাকার চলছে তাদের পরিবারে।
চাপা হাহাকারের খবর দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান (জাপা) জিএম কাদের। দরিদ্র পরিবারে করোনার প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণা জরিপের তথ্য তুলে ধরে নিরপেক্ষভাবে তালিকা তৈরিসহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দরিদ্র পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি জোরদারের দাবি জানান তিনি। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হাহাকারের খবর দেয়াসহ এ দাবি জানান।
সাম্প্রতিক গবেষণাটি করে পিপিআরসি ও ব্র্যাক। গবেষণা জরিপটি বলছে, এক বছরে দেশের প্রায় প্রায় ২ কোটি ৪৫ লাখ ( ১৫ শতাংশ ) মানুষের জীবনমান দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে। আর বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী- আগে থেকেই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস আরো প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষের। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মহীনতা ও আয় কমে যাওয়ায় দারিদ্র্যের হার আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জিএম কাদের।
এদিকে সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতার কারণে দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রোববার এক বিবৃতিতে এ দাবি করে বসলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, অপরিকল্পিত লকডাউনে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন করছেন মানুষ।
অন্যদিকে জঙ্গিবাদ, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিংয়ের মতো কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ দমনে সফল, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিংয়ের মতো সমস্যাগুলো সরকার বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান তিনি। রোববার মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত চলমান বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় করোনা মোকাবিলা প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
করোনা মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানান, এ আন্দোলনের জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে প্রতিটি পাড়ায় করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। এ কমিটির কাজ হবে- মাস্ক বিতরণ ও পরিধানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা। নিজেদের এলাকায় কারো করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও টেস্টের ব্যবস্থা করা, সেই সঙ্গে সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা। আর জনসমাগম স্থানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি তদারকি ও নিশ্চিত করা। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় করোনা সংক্রমণ দ্রুত রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
এমকে