গোডাউনেই রয়েছে ঈদুল আযহার ভিজিএফের চাল

০৬ অগাস্ট ২০২১

দীপক সরকার, বগুড়া:

১৫ দিন পার হয়ে গেছে ঈদুল আযহা উদযাপনের। কিন্তু এ ঈদ উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফের চার হাজার কেজি চাল এখনো বিতরণ হয়নি বগুড়ার শেরপুরের শাহবন্দেগী ইউনিয়নে। চাল বিতরণের কার্ড নিয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দ্বন্দ্বে এ চাল ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে পড়ে রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে হতদরিদ্রদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কার্যক্রম ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ২৪ হাজার ৯৮০টি পরিবারের জন্য দশ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে  ১০নং শাহবন্দেগী ইউনিয়নে ২ হাজার ৪৯৮টি পরিবারের অনুকূলে ২৪ দশমিক ৯৮০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।

শাহবন্দেগী ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মেম্বার (সদস্য)  বলেন, ভিজিএফের চাল বিতরণের মাস্টাররোলে যাদের নাম রয়েছে, তাদের বেশিরভাগই চাল পাননি। একই ব্যক্তির নিকট থেকে একাধিক স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে উত্তোলনকৃত চাল কালোবাজারে বিক্রি করা হয়েছে।

শাহবন্দেগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল আমিন মন্ডল বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা ভিজিএফের সাতশ’ কার্ড দাবি করেন। তাদের চারশ কার্ড দেয়া হয়। কিন্তু দুস্থদের মধ্যে এসব কার্ড বিতরণ করা হয়নি। তাই কেউ চাল নিতে আসেননি। এ কারণে ওই সব কার্ডের চাল পরিষদের গোডাউনেই পড়ে আছে।’তিনি জানান, ‘বিগত সময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের যেসব কার্ড দেয়া হয়েছিল তা কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়। এবারো সেই কাজই করা হয়। তাই কার্ড পাওয়া দুস্থ ব্যক্তিদের না এনে দুয়েকজন নেতা তাদের ভাগের ভিজিএফের সব চাল নিতে এলে তাদের দেয়া হয়নি।

শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ভিজিএফের চাল বিতরণে চেয়ারম্যান নিজেই অনিয়ম করেছেন। মাস্টাররোলে ভুয়া নাম তালিকা করে এ চাল বিতরণ দেখিয়েছেন। আমরা কেবল চেয়ারম্যানের ওইসব অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামছুন্নাহার শিউলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘দ্রুত চালগুলো বিতরণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে মিটিং ডাকতে বলা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে চালগুলো বিতরণ করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের দুইদিন আগে ভিজিএফের চালগুলো বিতরণ শুরু করা হয়। কিন্তু সেখানে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব হওয়ায় চাল বিতরণে সমস্যা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে জটিলতা নিরসন করে চাল বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

 

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর