লকডাউনে কর্ম হারানো সুকেন এখন স্বেচ্ছাশ্রমের ট্রাফিক পুলিশ!

০৭ অগাস্ট ২০২১

মাহমুদ শরীফ, কুমারখালী (কুষ্টিয়া):

নেই  ট্রাফিক পুলিশিংর ওপর প্রশিক্ষণ বা এ সংক্রান্ত যথাযথ জ্ঞান, ছিলেন হোটেল শ্রমিক। তারপরও কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের কুমারখালী চৌরাস্তা (বাসস্ট্যান্ড) এলাকায় পুরোদস্তুর একজন ট্রাফিক পুলিশের মতোই যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন সুকেন। বিনিময়ে কারো কাছে থেকে কোনো সম্মানি বা ভাতা পান না তিনি, পুরোটাই স্বেচ্ছাশ্রমের এ কাজে কেবল কুড়াচ্ছেন প্রশংসা।

গত এক মাস ধরে এ কাজটি করছেন তিনি। তার আগে করোনা বিস্তার রোধকল্পে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে (লকডাউন) হোটেলের কাজ হারান সুকেন সরকার।সুকেন সরকার কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার সেরকান্দি এলাকার মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে। পরিবারে তার বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।

চৌরাস্তাটির পশ্চিমের ১২ কিলোমিটার কুষ্টিয়া জেলা শহর, দক্ষিণে ৫০০ মিটার দুরে কুমারখালী থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পৌরসভা ও প্রধান শহর। দক্ষিণের ৩০০ মিটার দুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর। পূর্বদিকে গেলে রাজবাড়ী সড়ক। ফলে সব সময়  যানজট আর জনসমাগম লেগেই থাকে এখানে। কিন্তু সেখানে কোন ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় প্রায়ই ঘটতো সড়ক দুর্ঘটনা।

সম্প্রতি কুমারখালীতে পুলিশের ওপেন হাউজ ডে কর্মসূচির অনুষ্ঠানে এলাকাবাসী দাবির মুখে এখানে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম। কিন্তু এখনো সেখানে পোশাকের ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন সুকেন সরকার।

সুকেন সরকার বলেন, একটি হোটেলে কাজ করতাম। লকডাউনে হোটেল বন্ধ। গোলচত্বর এলাকায় যানজট বেশি। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই যানযট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। কোনো সম্মানি বা ভাতা পাই না কারো কাছে থেকে।

কুমারখালী পৌরসভার মেয়র সামছুজ্জামান অরুন বলেন, গোলচত্বরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়ক সংস্কারের পর যানবহন চলাচল আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ নেই। তিনি জানান, ওপেন হাউজ ডে-তে পুলিশ সুপার ট্রাফিক নিয়োগের কথা দিয়েছিলেন, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। পুনরায় এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা হবে।

পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন,  করোনা ও লকডাউনের কারণে ওই চৌরাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ট্রাফিক পুলিশ নিয়েগের কাজ করা হবে।
 

এমকে

 

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর