চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্রগ্রামের সাতকানিয়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেয়া এবং তাদের কাছে থেকে উদ্ধার করা ৯৩০ পিস ইয়াবাসহ ইয়াবা বিক্রির ৩ লক্ষাধিক টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ার ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার ২ দিনের মাথায় মামলা হওয়ার পরে রোববার রাতে পুলিশ সহকর্মীর হাতে গ্রেফতার হয় তারা। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অভ্যন্তরে। যদিও তা নিয়ে মুখ খুলছেন না কেউ-ই। সাতকানিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনা অস্বীকার না করলেও মন্তব্য করতে রাজি হননি। আর পুরো ঘটনাটি জানাজানি হয় ৯ আগষ্ট রাতে।
গ্রেফতাররা হলেন- সাতকানিয়া থানার ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল শাহ মোহাম্মদ হাসান (২৭), আরাফাত নাজিম উদ্দীন (২৬) ও বিমল চাকমা (৪৬)।এ সময় তাদের কাছে থেকে জব্দ করা হয় সেই ইয়াবাসহ নগদ টাকা।এদিকে এ ঘটনায় তিন মাদক ব্যবসায়ীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৬ আগস্ট ঢেমশাস্থ নাপিতের চর এলাকায় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে অভিযুক্তরা। এ সময় তাদের কাছে থেকে ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৩ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করেন তারা। এরপর সেই টাকাসহ ইয়াবা নিয়ে আটকদের ছেড়ে দেন তারা। ঘটনাটি ওসিসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের জানাননি তারা। বিষয়টি জানতে পেরে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনা তদন্তের নির্দেশে ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়। এমনকি অভিযুক্ত তিন কনস্টেবল মাদকের টাকা আত্মসাৎ ও মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
পরবর্তীতে কনস্টেবল শাহ মোহাম্মদ হাসানের দেখানো মতে ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের ব্যারাক থেকে তার ট্র্যাংকের ভিতর নীল প্যাকেটে মোড়ানো ৩শ পিস ও একটি সাদা পলিথিনে রাখা ১৬৫ পিসসহ মোট ৪৬৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একই সাথে পুলিশের লোগোযুক্ত এক জোড়া হ্যান্ডকাফ, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়। একই ভবনে কনস্টেবেল আরাফাত নাজিম উদ্দীন থেকে দুটি ব্ল্যাঙ্ক চেক, নগদ ৩১ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে কনস্টেবল বিমল চাকমার পরিহিত প্যান্টের পকেট থেকে নগর ৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় এস আই জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে তিন পুলিশ কনস্টেবল ও ৫ মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ৮ জনের নামে মামলা করেন। এদের মধ্যে পুলিশ সোর্স সোলায়মান, ছেড়ে দেওয়া বেলাল ও আরাফাত রয়েছেন। মামলার পরপরই অভিযুক্ত তিন পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই জাহাঙ্গীর।
দিলীপ কুমার তালুকদার/এমকে