দেশে ভয়ঙ্কর রূপ নিতে এগোচ্ছে ডেঙ্গু, বিশেষেত রাজধানী ঢাকায়। বেশ কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই দুইশ’য়ের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের খবর দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। শুধু তাই নয়, গত জুলাইয়ে সৃষ্ট রের্কড ভেঙে গেছে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনেই। একক মাসের হিসাবে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় জুলাইয়ে- ২ হাজার ২৮৬ জন। আর আগষ্টের প্রথম ১০ দিনে শনাক্ত হয় ২ হাজার ৩২১ জন। এখন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে উদ্ভূত পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়ার আগেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সরকার।সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। বসে নেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রও। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিধনে ও মশার লাভা ধ্বংসে গণসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালতও।এ রোগ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে আবাসনসহ যে কোনো স্থাপনায় পানি জমিয়ে না রাখার ও জমানো পানিতে সৃষ্ট এডিসের লাভা ধ্বংসে সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে দেশের সব পৌরসভাকে এডিস মশা নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা মার্চেই জানিয়ে দেন সিডিসির পরিচালক। এবারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হবে আঁচ করতে পেরে চিঠি দিয়ে এ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম এ তথ্য জানান।
খুরশিদ আলম বলেন, এ বিষয়ে যে সচেতনতা তৈরি করার দরকার, সেটা করা হয়েছে। বারবার সিটি করপোরেশনগুলোকে বলা হয়েছে মশার উৎপত্তি স্থলগুলোকে ধ্বংস করতে। চিকিৎসা দেয়ার কাজটা স্বাস্থ্য অধিদফতর করবে।কিন্তু ডেঙ্গু যাতে না হয়, সেই ব্যবস্থাটা সিটি করপোরেশনগুলোকে নিতে হবে।
ওদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশে। এর মধ্যে ২২১ জনের বসবাস ঢাকায়। বাকি ২১ জন ঢাকার বাইরের- অন্য বিভাগের। এনিয়ে চলতি মাসে (১২ আগষ্ট পর্যন্ত) ২ হাজার ৭৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, চলতি বছরে ৫ হাজার ৪৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৫১৬ জন। বর্তমানে সবমিলে ৮৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ৮২৪ জন ঢাকায়, বাকি ৭২ জন ঢাকার বাইরে- অন্য বিভাগে আছেন। ডেঙ্গুতে মারা গেছেন- এমন সন্দেহে ২২ জনের মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।
এমকে