সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার

১৬ অগাস্ট ২০২১

বিনম্র শ্রদ্ধায় রোববার দেশে পালিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। দিবসের কর্মসূচিতে শোকের আবহের মাঝেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক , ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকার ছিল মানুষের কণ্ঠে। দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয় বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের। দিবসটি ঘিরে আগেই সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হয় এসব কর্মসূচিতে। খবর বাসস।

কর্মসূচির মধ্যে ছিল- দিনব্যাপী কোরআন তেলাওয়াত, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার, বঙ্গবন্ধুর সমাধি ও প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, কালো ব্যাজ ধারণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মিলাদ মাহফিল, রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ,দরিদ্র রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও বিদেশের বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি বেসরকারি টেলিভিশন-বেতার বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে এবং বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে সংবাদপত্র।

সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন, সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাসহ নানা শ্রেণী ও পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জনকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধু ভবনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানী কবরস্থানে গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কবরে পুষ্পস্তবক করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধেও প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া দেশের বাইরে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো ।

প্রসঙ্গত, ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসভবনে দৃশ্যত বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে একদল বিপথগামী সেনা, নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া তাঁর সহধর্মিণী ও পরিবারের বাকি সদস্যহস ঘনিষ্টজনদের হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে পান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে জনক হারানোর দিন পালন হয়নি। পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয় দিনটিকে। যদিও মাঝে বিএনপি-জামায়াত’র শাসনামলে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হয়নি। কিন্ত পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পূনরায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে ফের রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক দিবস পালন করা হচ্ছে প্রতিবছর।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর