টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩০(চ) ধারা অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা করা বিটিআরসির দায়িত্ব। অথচ সম্প্রতি দেশে অহরহ ঘটছে ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তি থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রী কেউই বাদ যাচ্ছে না। এতে একদিকে দায়িত্বশীলদের অনৈতিক ও অপরাধমুলক কর্মকাণ্ডের গোমর ফাঁস হচ্ছে ঠিকই, অন্যদিকে অনেকের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়ও বেরিয়ে আসছে জনসম্মুখে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মিডিয়ায় ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ব্যক্তির গোপনীয়তা, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ। ফোনে আড়িপাতা এবং ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টও। ফোনে আড়িপাতা ও ফোনালাপ ফাঁস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে করা রিটের শুনানিকালে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ফোনালাপে যুক্ত দুই পক্ষের মধ্যে এক পক্ষ বা তৃতীয় পক্ষও ফোনালাপ ফাঁস করতে পারেন উল্লেখ করে আদালত বলেন, ফোনালাপ ফাঁস করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে সব পক্ষকে সজাগ থাকা দরকার।
সোমবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ শুনানি হয়। ১০ আগস্ট রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দশ আইনজীবী। তার আগে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান রিটকারীরা।নোটিসটির জবাব না পাওয়ায় রিটটি করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
শিশির মনির আদালতকে বলেন, ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা এভাবে চলতে থাকলে আমরা কেউ নিরাপদ না। এটা প্রতিরোধে বিটিআরসির কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। তার বিরোধীতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ফোনালাপে যু্ক্ত যে কেউ এটা ফাঁস করতে পারেন। এখানে বিটিআরসির কী করার আছে? তাছাড়া সংক্ষুব্ধরা বিটিআরসিতে প্রতিকার চাইতে পারেন, মামলার করারও সুযোগ রয়েছে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের দিন আগামী রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) ধার্য করেন হাইকোর্ট।
এমকে