বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নারীসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে দোকানপাটও। আটক করা হয়েছে একজন নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যকে। আহতরা প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক, দোকানপাটও তাদের। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শরণখোলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিজয়ী ও পরাজিত ইউপি সদস্যের কর্মী-সমর্থকরা এ সহিংসতায় জড়ায়। সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে শরণখোলায়, ৩০ জন। আর রামপাল ও মোরেলগঞ্জে অন্তত ১০ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে এক নারীসহ পাঁচ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আটক নবনির্বাচিত সদস্য হলেন মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মো. শাহিন আজাদ।প্রতিপক্ষের উপর হামলা ও হুমকির অভিযোগে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
সাউথখালী ইউনিয়নের ৮নম্বর চালিতাবুনিয়া ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খলিফা জানান, ফলাফল ঘোষনার পর রাতে বাড়ি ফেরার পথে পরাজিত প্রার্থী জাফর তালুকদারের কর্মীরা তার কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে ছয় জন আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাইফুল ইসলাম রুবেল (৪১) ও মনির খানকে (৩৫) খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা শরণখোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।অভিযোগ অস্বীকার করে জাফর তালুকদার বলেন, মেম্বর জাহাঙ্গীর খলিফার লোকজনরাই আমার ৬-৭জন কর্মীকে মারধর করে আহত করেছে। সুলতান হাওলাদারের হাত ভেঙে গেছে। কিন্তু তাদের ভয়ে হাসপাতালে নিতে পারছি না। চালিতাবুনিয়া বাজারে আমার তিন কর্মীর দোকানও ভাঙচুর করেছে তারা।
সাত নম্বর বগী ওয়ার্ডের পরাজতি প্রার্থী হানিফ মুন্সির অভিযোগ, বিজয়ী মেম্বর রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও তার কর্মীদের ভয়ে তার কর্মীরা এক প্রকার ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের হামলায় আলী আজগর (৪৮) আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে রিয়াদুল পঞ্চায়েতের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
দুই নম্বর বকুলতলা ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম খান জানান, বিজয়ী দেলোয়ার হোসেন খলিলের লোকেরা তার তিন কর্মীকে মারপিট করেছে। এর মধ্যে রাজু মৃধাকে (২৪) খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তিন কর্মীর দোকান ভাঙচুর করেছে তারা। দোকানপাট ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে মেম্বর দেলোয়ার হোসেন খলিল বলেন, দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে আমার কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, নির্বাচন পবর্তী টুকটাক সংঘর্ষের খবর শোনা গেছে। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। সাউথখালী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা একটু ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় সেখানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
নূরুজ্জামান শেখ/ এমকে