দেশে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে সচল হচ্ছে অর্থনীতি। আর এ ব্যয়ের সঙ্গে বাড়ছে ডলারের চাহিদা, এ চাহিদার বিপরীতে কমছে বাংলাদেশি মূদ্রা টাকার মূল্যমান। ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির আরেকটি কারণ রেমিট্যান্স কম আসা। দেড় মাসের ব্যবধানে প্রতি ডলারের বিপরীতে প্রায় এক শতাংশ দর হারিয়েছে টাকা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এনিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই বলেই মনে করছেন অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করছেন, ডলারের চাহিদা বাড়লে পণ্যের দাম বাড়ে। তাই ডলারের দাম বাড়ার সুযোগ দিয়ে ঠিক কাজটিই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৫ আগস্ট থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে।বর্তমানে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৮-৮৯ টাকায়।
তথ্য বলছে, দাম বাড়তে শুরু হওয়ার সময় (৫ আগস্ট) আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪.৮০ টাকায় বিক্রি হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর একই ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা ৪৭ পয়সা। এদিনে সোনালী ব্যাংক ৮৭ টাকা ২০ পয়সা ও অগ্রণী ব্যাংক ৮৭ টাকা ৪০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। ব্যাংকের বাইরে খোলা বাজারে ৮৯ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রতি ডলার। গত অর্থবছরে দেশে প্রচুর রেমিট্যান্স এলেও সে অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম আসছে।
এদিকে টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন রফতানি খাতের ব্যবসায়ীরা। দেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ায় খুব বেশি লাভবান হতে পারছেন না এ খাতের ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ বছরের অধিক সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে ১০০ টাকায় পাওয়া পণ্য বা সেবাটি এখন কিনতে লাগছে ১২৪ টাকা। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৩ সালের আগ পর্যন্ত ঘোষণা দিয়ে ডলার ও টাকার বিনিময় হার নির্ধারণ করে দিতো সরকার । ২০০৩ সালে এ হারকে ফ্লোটিং বা ভাসমান করা হয়। এরপর আর ঘোষণা না দিলেও বিষয়টির ওপর সব সময়ই পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে বাজার স্থিতিশীল রাখতে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার পর্যন্ত বিক্রি করেছে ৬০ কোটি ডলারের মতো । বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।
এমকে