করোনায় ভুগে জুলাই মাসে ছয় হাজার ১৮২ জন ও আগস্টে পাঁচ হাজার ৫১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গেল সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা দাঁড়ায় এক হাজার ৩১৫ জন। সঙ্গে কমছে সংক্রমণের সংখ্যা আর দৈনিক শনাক্তের হারও। এভাবেই এ তিন ট্র্যাকে গতি হারাচ্ছে মরণব্যাধি করোনা। গতি হারানোয় জনমনে স্বস্তি ফিরলেও কাটছে না শঙ্কা।
করোনার স্বাস্থ্যবিধি ঠিকঠাক মতো না মানলে, করোনার টিকা নিশ্চিত করা না গেলে যে কোনো সময় আবারো রোগটি ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই।তাদের মতে, বিশ্বের অনেক দেশে সংক্রমণ এখনো বাড়ছে। দ্রুত টিকা নিশ্চিত করা হলে সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যুর পরিমাণটা হয়তো কমানো সম্ভব হবে। আর টিকা নিশ্চিত না হলে ধরণ পাল্টে নতুন রূপে হানা দিতে পারে করোনা।
মৃত্যুর এ তথ্য পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে। তাদের হিসাবে আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে মৃত্যু ৭৬ দশমিক ১৩ শতাংশ ও শনাক্তের ৭৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরে করোনা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়া শুরু করে জুনে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব ঘেঁটে দেখা গেছে, জুনে শনাক্ত হয় ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন, শনাক্তের হার ওঠে ২০ শতাংশের ওপরে। অথচ তার আগের মাস মে’তেও শনাক্ত ছিল ৪১ হাজার ৪০৮ জন, শনাক্তের হারও ২০ শতাংশের অনেক কম ছিল। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে একদিনেই ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায় শনাক্তের সংখ্যা, দেশে করোনা হানা দেয়ার পর এটাই প্রথম সর্বোচ্চ শনাক্ত ছিল। এ মাসেই শনাক্ত হয় নতুন ধরণ- ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এ মাসে প্রায় প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের সৃষ্ট রেকর্ড ভাঙতে থাকে। মাসের শেষ দিকে একদিনের হিসাবে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়- ১৬ হাজার ২৩০ জন। শনাক্তের হার ওঠে যায় ৩২ শতাংশের ওপরে। মাস শেষে এ মাসে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জন। আগষ্টেও তাণ্ডব চালায় করোনা, একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় দুইদিন (৫ ও ১০ আগষ্ট)- ২৬৪ জন। এ মাসে শনাক্ত হয় ২ লাখ ৫১ হাজার ১৩৪ জন। সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫ হাজার ২৯৩ জন। ধীরে ধীরে তাণ্ডবের গতি হ্রাস হওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর চার শতাংশের নিচে নামে দৈনিক শনাক্তের হার। পরবর্তী তিনদিন ধরেই এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে দৈনিক শনাক্তের হার টানা দুই সপ্তাহ পাঁচ শতাংশের নিচে থাকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বলে ধরা হয়।
এমকে