মোবাইল ফোন ও গেজেট আসক্তি স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়াচ্ছে মানসিক সমস্যা, সঙ্গে শারীরিক সমস্যাও।করোনা সংক্রমণ শুরু পরবর্তী এক বছরে বেড়েছে এ আসক্তি।এ সময়ে ঘরবন্দি থেকেছে তারা।আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা উইলি’র হেলথ সায়েন্স রিপোর্ট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার ফলাফলে এমনটাই বলা হয়েছে।
গেজেট নির্ভরশীলতা দীর্ঘ মেয়াদি হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একটি বড় অংশের জন্যই আশঙ্কার বিষয় বলে মনে করছেন গবেষণা সংশ্লিষ্টরা। বলছেন, সমস্যাগুলো দীর্ঘায়িত হচ্ছে কি-না খতিয়ে দেখতে। গেজেট আসক্তি কমাতে পারিবারিকভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
দেশের ২১টি জেলায় এ গবেষণা জরিপ চালানো হয়। এতে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম, মাদ্রাসা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মিলে এক হাজার ৮০৩ জন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে শিক্ষার্থীদের মাথা ব্যথা, হাত-পা ব্যথা, ঘুম ও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা। ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেছে- তারা মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছে, মেজাজ খিটখিটে হয়েছে কিংবা দ্রুত রেগে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ইংরেজি মাধ্যমে এবং সবচেয়ে কম মাদ্রাসা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাঝে এ আসক্তি দেখা গেছে।
জরিপে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনে ৬৮ ভাগ ২-৪ ঘণ্টা মোবাইল ফোনে, ৯ ভাগ কম্পিউটার স্ক্রিনে ও ৮ ভাগ ট্যাবে অধিকাংশ সময় পার করেছে। ৭০ ভাগ কায়িক পরিশ্রম বা খেলাধুলার সুযোগ পায়নি। নিয়মিত গেজেট ব্যবহার করেছে অনলাইন ক্লাসের জন্য ২৫ ভাগ, কার্টুন, নাটক ও চলচ্চিত্র দেখতে ৪০ ভাগ, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ২৭ ভাগ এবং গেম খেলতে ১৭ ভাগ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে ডায়রিয়া, চুলকানির সমস্যা, পেট ব্যথা, জ্বর ও সর্দি সবচেয়ে প্রকট থাকলেও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তির জটিলতা, ঘুমের সমস্যা, বিষণ্ণতা ও খিটখিটে মেজাজ এবং জ্বর সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
গবেষণাকর্মটি পরিচালনা করেছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি ও সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
এমকে