লাজু মিয়া, লালমনিরহাট:

লালমনিরহাটে তিস্তার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস সড়ক। এতে রংপুর-বড়খাতা সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রেড অ্যালার্ট জারি করে তিস্তা পাড়ের আশপাশের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পানি। বুধবার বেলা এগারোটা দিকে সড়কটি ভেঙে যায়। তার আগে ভোর থেকেই পানি বাড়ায় জেলার তিন উপজেলার চর এলাকায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধান ও ভুট্টাক্ষেত। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে স্থানীয় রাস্তাঘাট। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় আপাতত উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

উজানের ঢল ও ভারতের গজলডোবার সব কয়টি গেট খুলে দেয়ায় হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে অবিরাম বৃষ্টি তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পানি ছিল না তিস্তায়, শুকিয়ে জেগে উঠেছিল চর। কিন্তু কার্তিক মাসে হঠাৎ তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে সব।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৬টায় পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, সকাল ৯ টায় ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ৫৩ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি ক্রমেই বাড়ছে।

প্লাবিত এলাকাগুলো হচ্ছে- পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলা ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল।

গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, তার ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছে পাঁচটি পরিবার। সিংঙ্গীমারী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, তার এলাকার ভেসির বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটি ভেঙে হাতীবান্ধা শহরে পানি প্রবেশ করলে শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বলেন, তিস্তা ব্যরাজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, পানিবন্দি হয়ে পড়া পরিবারগুলোর খোঁজখবর সার্বক্ষণিক রাখা হচ্ছে।

এমকে