বগুড়ার দুই উপজেলায় ‘স্বতন্ত্র’ পরিচয়ে বিএনপির ২২ প্রার্থী

০২ নভেম্বর ২০২১

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া:

দল অংশ না নিলেও ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হিসেবে বগুড়ার শেরপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলা মিলে ২০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে লড়ছেন বিএনপির ২২ নেতাকর্মী। ভোটের মাঠে তারা নিজেদেরকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। এতে নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয় থাকা সত্ত্বেও কেবল দলের সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়া নেতাকর্মীদের মাঝে এনিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ বেড়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করা এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট একেএম সাইফুল ইসলাম। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়েছে বিএনপি।

এ দুই উপজেলায় আগামী ১১ নভেম্বর ভোট হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেরপুরের ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বিএনপির ১২ নেতাকর্মী। এর মধ্যে খানপুর ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক পিয়ার হোসেন পিয়ার, কুসুম্বী ইউনিয়নে শেরপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম পান্না ও ইউনিয়ন যুবদল নেতা আবদুল মোমিন, ভবানীপুর ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য জিএম মোস্তফা কামাল, সুঘাটে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন জিহাদ, সীমাবাড়ী ইউনিয়নে বিএনপির সাবেক সভাপতি আফতাব হোসেন তালুকদার, খামারকান্দি ইউনিয়নে বিএনপি নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহাব, মির্জাপুর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আলহাজ্ব জাহিদুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মোনায়েম হোসেন ও মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক এবং শাহবন্দেগী ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম ও আসাদুজ্জামান আসাদ রয়েছেন।

খানপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী পিয়ার হোসেন পিয়ার বলেন, ব্যক্তি ইমেজে প্রার্থী হয়েছি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয়ী হবো। ভবানীপুর ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা জিএম মোস্তফা কামাল বলেন, দলের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই ধানের শীষ প্রতিক বিহীন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি। বিজয়ী হয়ে প্রমাণ করতে চাই-জনগণ বিএনপির মানুষকে কতটা ভালভাবে।

অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে আটটিতে বিএনপির ১০ জন চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তোফায়েল আহম্মেদ সাবু, বিএনপি কর্মী আবদুল ওয়ারেস আকন্দ ও আবু বক্কর সিদ্দিক; মাঝিহট্ট ইউনিয়নে আকবর আলী তালুকদার, দেউলীতে মোতাছিম বিল্লাহ, সৈয়দপুর ইউনিয়নে মাহমুদ হোসেন তৌফিক, পিরব ইউনিয়নে মতিউর রহমান, বিহার ইউনিয়নে জুলফিকার হাসান শাওন, রায়নগর ইউপিতে হাফিজার রহমান হিরু এবং বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে ওবায়দুর রহমান রয়েছেন। শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মাস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, দলীয় নির্দেশনা না থাকায় দলের অনেকেই স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাদের বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও শেরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু বলেন, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই। দিনের ভোট রাতে হয়। তাই এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। পদ-পদবি থাকা নেতাকে নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধ করেছি আমরা। এরপরও কেউ চাইলে তাকে দলীয় সমর্থন ও প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে।

 

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর