শুক্রবার ভোর থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবহণ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। এতে বিপাকে পড়েছেন চাকরি প্রার্থীসহ সাধারণ মানুষ। স্বাভাবিক পণ্যের সরবরাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা, বিশেষত কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। হঠাৎ করেই জ্বালানি তেল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে।
যদিও একটি সংগঠন ছাড়া বাকি সংগঠনগুলো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি এখনো, বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পরিবহণ সংগঠনগুলোর নেতারা। এদিকে বর্ধিত এ দাম প্রত্যাহার অথবা বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে সরকারকে চিঠি দিয়েছেন পরিবহণ মালিকরা।
সংগঠনগুলোর নেতারা মনে করছেন, এভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় প্রতি ট্রিপেই খরচ বাড়বে। বর্ধিত এ দাম প্রত্যাহার বা ভাড়া বাড়ানো না হলে লোকসান গুনতে হবে। এমনিতেই করোনার ধকল এখনো পুরিপুরি কাটিয়ে ওঠতে পারেনি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। তার মধ্যেই এ দাম বাড়ানোটা মরার ওপর খাড়ার ঘা।
অন্যদিকে পরিবহন সংগঠনগুলোর দাবির সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো জ্বালানির বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। তারা বলছেন, এতে মুলত সাধারণ মানুষের ওপর খরচের চাপ বাড়বে।
বৃহস্পতিবার বৈঠক করে আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য পরিবহণ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরি প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। এদিন এ বিষয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা। এ সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা ধর্মঘট ডাকেনি। বাস মালিকরা মনে করছে বর্ধিত তেলের দামে বাস চালিয়ে লোকসান হবে, তাই তারা বাস চালাতে রাজি নন। একই দিন বৈঠক করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র নেতারা। বৈঠকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়- শ্রমিকরা শুক্রবার থেকে কোনো বাস-ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চালাবেন না।
অন্যদিকে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- (ন্যাপ) বাসদ (মার্কসবাদী), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-(জাগপা), বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি, ইসলামি আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টও জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এমকে