পোকাটি অনেকটাই জোগান দিতে পারে মাছ এবং হাঁস-মুরগির খাদ্যের। পোলট্রি, ডেইরিসহ বাড়ির বর্জ্য পরিশোধনের মাধ্যমে উৎপাদন করতে পারে গুণগতমানের কম্পোস্ট সার। এতে খরচ কম হওয়ায় আর্থিক সাশ্রয় হয়। তাছাড়া মাছ এবং হাঁস-মুরগির খাদ্যের ভেজাল থাকার সম্ভবনা একদমই নেই। দশ বছর ধরে গবেষণা শেষে ‘কালো সৈনিক’ বা ‘ব্লাক সোলজার্স’ নামের এ পোকা সম্পর্কে এসব তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালাম। পোকাটির সঙ্গে মাছ ও বর্জ্য নিয়ে গবেষণা করছেন ড. সালাম।
ড. আব্দুস সালামের দেয়া তথ্যানুযায়ী, মূলত এ পোকার লার্ভা বিকল্প খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় মাছের। লাভা থেকে প্রস্তুতকৃত মাছের খাদ্য তেলাপিয়া মাছের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে বাজারে প্রাপ্ত বাণিজ্যিক খাদ্যের চেয়ে অনেক ভালো ফল পাওয়া গেছে। ক্যাটফিস, তেলাপিয়া ও হাঁস-মুরগির খাদ্য হিসেবে এ পোকার লার্ভা ব্যবহার করে আশানুরূপ ফল পেয়েছে অনেক উন্নত দেশ- যোগ করেন অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
রোববার ‘মৎস্য খাদ্যের বিকল্প হিসাবে কালো সৈনিক পোকার চাষ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান অধ্যাপক আব্দুস সালাম। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েই মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারিতে এ কর্মশালা হয়। সভাপতিত্ব করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক।
ড. আব্দুস সালাম জানান, ময়লা-আবর্জনা, পচনশীল ফলমূল, শাকসবজি, হাঁস মুরগির বিষ্ঠা ও গৃহপালিত প্রাণীর মল ভক্ষণ করে ও জৈব আবর্জনার ৭১ দশমিক পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত হজম করে থাকে এ লার্ভা। বাকি অংশ রূপান্তরিত হয় বায়োডিজেল, প্রোটিন ও কম্পোস্ট সারে। পোকাটি পরিবেশবান্ধব ও কৃষকের বন্ধু।
আব্দুস সালামের দেয়া তথ্যানুযায়ী, শুষ্ক অবস্থায় লার্ভায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ আমিষ, ৩০ থেকে ৩৬ শতাংশ স্নেহ ও ২০ থেকে ২২ শতাংশ শর্করাসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়াম থাকে।
ড. আব্দুল সালাম জানান, কৃষক এ পোকার চাষ করতে পারেন। দেশের জলবায়ু এ পোকার উপযোগী হওয়ায় ব্যাপক উৎপাদন সম্ভব। ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে মাছচাষিদের মাঝে পোকার লার্ভা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি লাভা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকা দরে। এ লার্ভার ব্যাপক পরিমাণে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বানিজ্যিক কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
এমকে