চালু হলে পাল্টে যাবে উত্তরের অর্থনীতি

১৬ নভেম্বর ২০২১

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া:
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু হওয়া বগুড়া বিমানবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতেই, ২০০০ সালে। কিন্তু এখনো  বাণিজ্যিকভাবে বিমান ওড়েনি এ বন্দর থেকে। সম্প্রতি বিভিন্ন মহল থেকে এ বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে চালুর জোরালো দাবি ওঠেছে। তারা মনে করছেন, বিমানবন্দরটি চালু হলে এ অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি পৌঁছে যেতে পারে দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের হাতে। সৃষ্টি হবে শিল্পনগরী খ্যাত বগুড়ায় দেশি-বিদেশি বিনোয়োগকারীদের জন্য অবারিত সুযোগ। এক কথায়, পাল্টে যাবে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি। বিমানবন্দরটি বর্তমানে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এ জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ছোট-বড় অর্ধশতাধিক শিল্প-কারখানা রয়েছে- ওষুধ, খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য সংশ্লিষ্ট। তারকা খচিত একাধিক হোটেল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু ও সরকারি-বেসরকারি একাধিক মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তাছাড়া আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন জনপদ পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী পুণ্ড্রনগরের অবস্থান বগুড়ার মহাস্থানে হওয়ায় প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫ হাজার বিদেশি পর্যটক এ জেলায় আসেন।

এদিকে জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ মার্চ বিমানবন্দরটি চালুর প্রস্তাবনাযুক্ত একটি চিঠি বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীকে দেন বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ নভেম্বর বিমানবন্দরটি পরিদর্শন করেছেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ(বেবিচক) এর একটি প্রতিনিধি দল। পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষকে দেয়া হবে, সিদ্ধান্ত ওখান থেকেই আসবে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি দলটির প্রধান উপ-সচিব ইশারাত জাহান পান্না।

বগুড়ায় বিমান বন্দর চালুর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বগুড়ার শিল্প ও বণিক সমিতির  সভাপতি মাছুদুর রহমান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-অর্থনীতি, কৃষিসহ সব দিক থেকে এগিয়ে বগুড়া। অর্থনৈতিক অঞ্চলও হচ্ছে। ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা আরো বাড়ছে। এসব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালু করা জরুরি।  তিনি জানান সড়কপথে ঢাকা থেকে বগুড়া আসতে কমবেশি ১০ ঘণ্টা সময় লাগে। পথের ভোগান্তির কারণে বগুড়ায় কোনো বিদেশি ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও রপ্তানিকারক আসতে চান না। তারা না এলে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন তেমন কাজে আসবে না। শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান বলেন, ক্রিকেটারদের যাতায়াতের সমস্যাসহ নানা কারণে এ ভেন্যুতে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচ হচ্ছে না। বিমানসেবা চালু ছাড়া আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব না।

জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিক রুটে সচল করতে  আরো তিন হাজার ফুট রানওয়ে সম্প্রসারণসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনো অনুমোদন মেলেনি। অনুমোদন মিললেই তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবেন। তাছাড়া ১৫ নভেম্বর বেবিচকের প্রতিনিধি দলের পরিদর্শন  মোতাবেক কোন নির্দেশনা পাওয়া গেলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর