দিন দিন রোগীদের নিজ পকেট থেকে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে দেশে। এক কারণে ১৬ দশমিক ৪ ভাগ রোগী প্রয়োজন থাকলেও চিকিৎসা নিতে পারেন না। সবচেয়ে বেশি খরচ হয় ওষুধ খাতে। ফলে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে বিরাজ করছে অসন্তোষ। এ ব্যয় কমিয়ে আনতে কৌশলপত্র নেয়া হলেও প্রতিকার মিলছে না। চিকিৎসা ব্যয় সংক্রান্ত এ তথ্য মিলেছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণা প্রতিবেদনে।
এদিকে এ ব্যয় কমাতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সমন্বিত সেবায় ‘ই-হেলথ’কার্যক্রম চালু, পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা বাড়ানো ও পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট।
রোববার পাথওয়েজ টু রিডিউজ হাউসহোল্ড আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটির তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানী ঢাকায় হোটেল ইন্টারকনটিনেন্টালে এ অনুষ্ঠান হয়, উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গড়ে এখন চিকিৎসা নিতে নিজ পকেট থেকে ৬৮ দশমিক ৫০ ভাগ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে একজন রোগীকে। ২০১২ সালে এ ব্যয় ছিল ৬৪ ভাগ। বলা হয়, সরকারি হাসপাতালে মাত্র তিন শতাংশ রোগী ওষুধ পেয়ে থাকেন, আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ রোগীর। বেশিরভাগ রোগীকে ওষুধ কিনতে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় বেসরকারি ফার্মেসি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে। এতে রোগীর ব্যয় বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রোগীদের ওষুধ খাতে ব্যয় হয় ৬৪ ভাগ। হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে সেবায় ২৩ ভাগ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ৮ ভাগ অর্থ ব্যয় হয়। ২০৩২ সাল নাগাদ এ ব্যয় ৩২ ভাগে নামিয়ে আনতে কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে।
এ ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেও। বলছেনে, আউট অব পকেট বেড়েছে। নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে ওষুধের খরচ। নন কমিউনিকেবল ডিজিজের কারণে সারা জীবন ওষুধ খেতে হয়, তাই খরচ বাড়ছে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনে বেশি অ্যান্টবায়োটিক সেবন ও টেস্ট করার কারণেও ওপিপি বাড়ছে। প্রাইভেট সেক্টরে সার্ভিস কস্ট বেশি, আর বিদেশে চিকিৎসা নেয়াও খরচ বৃদ্ধির আরেক কারণ মনে হয় তাঁর। এ সময় অপ্রয়োজনে টেস্ট না দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানান মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বক্তব্য অনুযায়ী, খরচ কমানোর বিষয়ে নানা পদক্ষেপসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। স্বাস্থ্যের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে,সুস্থ থাকলে চিকিৎসা খরচ কম হবে। পরিবেশ দূষণ রোধ করতে পারলে অসুখ কম হবে। প্রত্যেককে বছরে চেকআপ করালে রোগ নির্ণয় হবে আগেই, অল্প খরচে সুস্থ হবে। এ কালচার তৈরি করতে হবে। ইথিক্যাল হতে হবে ওষুধ ও টেস্ট।
এমকে