বেড়েছে আমদানি ব্যয়

০৬ ডিসেম্বর ২০২১

চলতি অর্থবছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের তুলনায়। শুধু তাই নয়, এ ব্যয়ে এ বছর রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। বেশি আমদানি বেড়েছে গেল অক্টোবর মাসে, আগের বছরের এ সময়টার তুলনায় বেড়েছে  ৬২.৫০ শতাংশ। এর আগে একক মাসে এতো আমদানি ব্যয় হয়নি দেশে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এ ব্যয় বৃদ্ধির তথ্য জানা গেছে।

এদিকে আমদানির আড়ালে দেশের টাকা বিদেশে পাচারের একটা শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এ সুযোগে বিদেশে টাকা পাচার যেন না, সে জন্য সংশ্লিষ্টদেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।

অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেলসহ বড় বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানিতে ব্যয় হচ্ছে মোটা টাকা। সব মিলিয়ে সব খাতেই উৎপাদন কার‌্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কাঁচামালসহ সব পণ্যের প্রয়োজন হচ্ছে। সে কারণে আমদানি বেড়ে গেছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পণ্য জাহাজীকরণের ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়াটাও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির আরেকটা কারণ।

অন্যদিকে বিনিয়োগ ভিত্তিক আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিকে অর্থনীতির জন্য ভালো হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ। তাদের মতে, আমদানি বেড়ে যাওয়া মানে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া, বিনিয়োগ বৃদ্ধি হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হয়। কেউ কেউ আবার বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, আমদানি ব্যয় বাড়লে  ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। এতে টান পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। যদিও রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার মতো কোনও পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি। কারণ, আমদানি ব্যয় বাড়লেও বেড়েছে পণ্য রফতানি আয়ও। তারপরও প্রবাসী আয় বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বিশ্লেষকদের তরফ থেকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অক্টোবর মাসে ৭১১ কোটি (৭.১১ বিলিয়ন) ডলার দামের বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা হয়েছে। গত বছরের এ সময়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৩৭ কোটি ডলার। সেই হিসাবে অঙ্কে ব্যয় বেড়েছে ২৭৪ কোটি ডলার। শুধু অক্টোবরেই নয়, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ ব্যয় বেড়েছে তার আগের মাসগুলোতেও। যেমন- সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৫০.৩৭ শতাংশ, আগস্টে ৭৩ শতাংশ, জুলাইতে ২১ শতাংশ ও জুনে ৪৪ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর) সার্বিকভাবে এ ব্যয় বেড়েছে ৫১.৩৯ শতাংশ। আমদানি হয়েছে দুই হাজার ৫৮৩ কোটি ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরে এ সময়ে আমদানির পেছনের ব্যয়ের অঙ্ক ছিল এক হাজার ৭০৬ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের পুরোটা সময় আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৫৫৯ কোটি ডলার।

এমকে

 

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর