অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত বগুড়ার গরফা ও খাউড়ার বিল

২৬ ডিসেম্বর ২০২১

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া:

ঘাস আর ধানের পাতার অগ্রভাগে থাকা শিশির কণা রোদ লাগায় ঝলমলিয়ে জানান দিচ্ছে ঋতু পরিবর্তনের খবর, এসে গেছে শীত। সকালটা কুয়াশার চাদরে মোড়ানো বিস্তৃীর্ণ আবাদি মাঠ, শিশির ভেজা পথ-ঘাট আর দিনভর পাখির কলকাকলিতে মুখর গ্রামীণ প্রকৃতি। নিঝুম রাতে টুপটাপ শিশির ঝরার শব্দ সত্যি অনিন্দ্য সুন্দর অনুভূতি।

শীতের সঙ্গে এসেছে অতিথি পাখিও। আর এ পাখিদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গরফার বিল ও শাজাহানপুরের খাউড়ার বিল। শুধু বিলই নয়, পাখিদের অনবদ্য ওপরে ওঠানামা ও কলকাকলি মনোমুগ্ধকর পরিবেশ অপূর্ব সৌন্দর্র লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে পুরো বিল এলাকা। আর  অতিথি পাখি দেখতে প্রতিদিনই জেলা শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।

বিলের পানিতে ভাসছে সাদা চাঁদমালা ফুল, এর  ফাঁকে ফাঁকে ভাসছে পাতিসরালি। শুধু পাতিসরালি নয়, হাঁস, বালিহাঁস, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, শামুকখোল, বিভিন্ন ধরনের বক, হট্টিটি ও শালিকসহ বিভিন্ন ধরনের পাখির দেখা মেলে। মাঝেমধ্যে এসব পাখি ডানা মেলে আকাশে উড়াল দিচ্ছে।  এ দৃশ্য দৃষ্টি কেঁড়ে নেয় দর্শনার্থীদের।

উপজেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্ব দিকে খামারকান্দি ইউনিয়নের গরফার বিল। বিলপাড়ের বাসিন্দাদের একজন কৃষক আমজাদ হোসেন, জানান- এ বিলের পাশে তাদের চাষের জমি। তাই নিয়মিত আসতে হয় জমি পরিচর্যার জন্য। এ সময় বিলের পাখির ডাকাডাকিতে মন ভরে যায়। যারা বিলের পাশ দিয়ে যাতায়াত করেন, পাখিদের কলকাকলি ও ডানা মেলে ওঠানামার দৃশ্যে একটু সময়ের জন্য হলেও দাঁড়িয়ে যান। তবে মাঝেমধ্যে পাখি শিকার করতে আসা অপরিচিত ব্যক্তিদের বিলের আশপাশে দেখা দেয় এবং পাখি শিকারে প্রস্তুত হলে বাধা দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা ।

এদিকে বগুড়া শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে শাহজাহানপুর উপজেলায় রয়েছে খাউড়ার বিল। এখানেও গরফার বিলের মতোই দেখা মেলে অতিথি পাখি।  স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই শীতকালে বিভিন্ন ধরনের শ’ শ’ পাখি আসে এ বিলে। এলাকার মানুষ পাখিদের মারতে দেয় না। এমনকি ঢিলও ছুড়তে দেয় না।

শাহজাহানপুর উপজেলার চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন ছান্নু জানান, অতিথি পাখিদের যেন কোনো সমস্যা না করা হয়, সেজন্য বিলের আশপাশের মানুষদের সচেতন করা হয়েছে। এলাকার মানুষই এখন পাখিদের সংরক্ষণ করে। তিনি বলেন, ‘আমরা পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা রাখব।’উপজেলা চেয়ারম্যানের মতোই বিলপাড়ের মানুষদের সচেতন করার কথা বললেন, বগুড়া বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ফজলে বারী রতন। জানান, এলাকার মানুষই এখন পাখিদের সংরক্ষণ করে।

এমক


মন্তব্য
জেলার খবর