টাকা না দিলে মিলছে না বিনামূল্যের বই!

০১ জানুয়ারী ২০২২

বগুড়া প্রতিনিধি:

বগুড়ার শেরপুরে শিক্ষা অফিসে টাকা না দিলে নতুন শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যের বই পাচ্ছেন না স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। নির্ধারিত সময়ে বই দিতে না পারা ও বিভিন্ন হয়রানির ভয় দেখিয়ে দু’জন শিক্ষকের মাধ্যমে আদায় করা হচ্ছে এ টাকা। এ নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। হয়রানির ভয়ে তারা প্রতিবাদ বা অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকছেন। তবে শিক্ষা অফিসের কেউ এ টাকা আদায়ের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে এসব জানা গেছে। এদিকে সরকার প্রদত্ত বিনামূল্যের এ বই সরবরাহে টাকা আদায় করায় সরকারের উদ্দেশ্য ব্যহত ও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকে। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তিও দাবি করেছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উপজেলার ২৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বই বিতরণ করেছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭৩টি, ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৫টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, শিক্ষা অফিস থেকে এ বই পেতে প্রত্যেক কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে ১২শ’ টাকা, মাধ্যমিক স্কুল ৫শ’ টাকা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো থেকে ৩’শ টাকা দিতে হয়েছে। ওই অফিসের কর্মকর্তা নজমুল ইসলামের কথায় তোফাজ্জল ও নাজমুল নামের দুই শিক্ষক এ টাকা আদায় করেন বলে দাবি ভুক্তভোগী শিক্ষকদের। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে কোনো বই দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় ভুক্তভোগীদের।

শিক্ষক আসলাম হোসেন, জাহিদুল ইসলামসহ একাধিক ভুক্তভোগী  বলেন, কয়েক বছর ধরেই এভাবে নতুন বই নেওয়ার সময় তাদের কাছে থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ জানিয়েও কোনও লাভ হয় না। শিক্ষা অফিসে তাদের অনেক কাজ থাকে। তাই বেশি কিছু বললে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয়। এ বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত তোফাজ্জল ও নাজমুল ইসলাম কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ঘটনাটি সম্পর্কে সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাবেন বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তারা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. মিনা খাতুন বলেন, বই বিতরণের সম্পূর্ণ কাজটি করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। তাদের শিক্ষকরা টাকা দিয়ে বই নিয়ে থাকলে যাদের সম্পর্কে অভিযোগ, তারাই ওই বিষয়ে জবাব দেবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজমুল ইসলাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে গনমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘কে বা কারা টাকা নিয়েছে সেটি বলতে পারব না। বই নেওয়ার সময় টাকা আদায়ের বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। এরপরও খোঁজখবর নেওয়া হবে।

 

দীপক কুমার সরকার/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর