‘কারিনের সাথে লিভ ইনে ছিল ইলিয়াস, ভালোবেসে ক্ষমা করেছিলাম’

০৫ জানুয়ারী ২০২২

আলোচিত মডেল-অভিনেত্রী সুবাহ শাহ হুমায়রা স্বামী সঙ্গীতশিল্পী ইলিয়াসের বিষয়ে বলেছেন, প্রতিটি মানুষের জীবনে অতীত থাকে, ভুল থাকে। কিন্তু আমি ইলিয়াসের সেই সব অতীতকে নেতিবাচক হিসেবে না নিয়ে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। এর জন্য আমার যদি অন্যায় বা পাপ হয়ে থাকে তাহলে আইন আমাকে শাস্তি দেবে।

 

গেল বছরের ১ ডিসেম্বর সঙ্গীতশিল্পী ইলিয়াস হোসাইনকে বিয়ে করেন আলোচিত মডেল সুবাহ। তাদের বিয়ের খবরটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হলুদের দাগ না শুকাতেই নব দম্পতির মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা। একজন আরেক জনকে দোষারোপ করতে থাকেন।  

 

মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর রোড নং-২ এর একটি ভাড়া বাসা থেকে সংবাদ সম্মেলন করেন সুবাহ। এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেন।

 

সুবাহ বলেন, ১ ডিসেম্বর (২০২১ ইং) রেজিস্টির মাধ্যমে আমার বাসার সবার সামনেই তার (ইলিয়াস) সঙ্গে বিয়ে হয়েছে আমার। আমাদের বিয়েটি হালাল ও আইন মোতাবেক বৈধ। এর মধ্যে কিন্তু আছে, তার সঙ্গে আমার কালেমা পড়া হয়েছিল ১ ডিসেম্বরেরও আগে।

 

চার মাসের সম্পর্কে প্রণয় গড়ার আগে ইলিয়াসের পূর্ব জীবন সম্পর্কে জানতেন কিনা প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, ইলিয়াসের আগের স্ত্রী কারিনের বিষয়ে শুধু জানতাম। তার বিষয়ে কিছু নিউজ দেখেছিলাম।

 

আমি ইলিয়াসকে প্রশ্ন করেছিলাম, ইলিয়াস কারিন আসলে তোমার জীবনে কী? সে তোমার গার্লফ্রেন্ড, না বউ? ও আমাকে বলেছিল গার্লফ্রেন্ডই বলতে পারো। তোমাকে তো মিথ্যা কথা বলব না, কারিন হচ্ছে আমার গার্লফ্রেন্ডই। কিন্তু সামাজিকভাবে আমাদের একটা পরিচয় দেয়া দরকার, সেজন্য তাকে আমি স্ত্রী বলতাম। আমি তার সঙ্গে লিভ ইনে ছিলাম।

 

সুবাহ বলেন, আমি যেহেতু ইলিয়াসের স্ত্রী এবং ওর ভালো বন্ধু ছিলাম তাই সে আমাকে এগুলো বলে। কারিন আসলে সুইডেনে বাস করে। তারা মেন্টালি বিয়েতে বিশ্বাসী না, বিশ্বাসী হচ্ছে লিভ ইন টুগেদারে। তারা প্রায় এক থেকে দেড় বছরের মতো লিভ ইনে ছিল। তবে সবাই জানতো কারিন তার স্ত্রী। কিন্তু তাদের কোনো লিগ্যালি পেপারস ছিল না। সামাজিক কারণে তারা কালেমা পড়েছি কি পড়েনি, বা তারা বাইবেল পড়ে বিয়ে করেছে কিনা তা আমার জানারও দরকার নেই।

 

তিনি বলেন, আমি ইলিয়াসকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কাবিন নামা আছে?, যখন সে বলছে না তখন আমি চিন্তা করেছি যেহেতু সেটা তার (ইলিয়াস) জীবনের ভুল, তাই সেসব মেনে নিয়েছি। প্রতিটি মানুষের জীবনে অতীত থাকে, ভুল থাকে। কিন্তু আমি সেই সব অতীতকে নেতিবাচক হিসেবে না নিয়ে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। এর জন্য আমার যদি অন্যায় বা পাপ হয়ে থাকে তাহলে আইন আমাকে শাস্তি দেবে।

 

ইলিয়াসকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করা কি সম্ভব? পৃথিবীর কোনো ছেলেকে, একজন মিডিয়াকর্মীকে বিয়ে করা কি সম্ভব, সম্ভব না। ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার কথা ইলিয়াসের মনগড়া কথা। এর যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে। আর আমি বারবার বলেছি, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করা সম্ভব না। মিডিয়ার একজন ছেলেকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করা কখনোই সম্ভব না।

তিনি বলেন, ধরে নিলাম তাকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছি। গায়ে হলুদ হলো ৩০ বা ৩১ নভেম্বর, আর বিয়ে হয়েছে ১ ডিসেম্বর। তাহলে এর আগে আমার বাসার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলে দেখা যাবে সে নিজ ইচ্ছায় গাড়ি ড্রাইভ করে আমার বাসায় আসতো। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা আমার সঙ্গে থাকতো। সে আমার হাতের রান্না খেত। সে আমার সঙ্গে সংসার করেছে। এগুলো কি মিথ্যা?

 

অভিনেত্রী আরও বলেন, ধরে নিলাম ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছি। কিন্তু এর আগে যে সে আসতো, সেগুলো কী? তখন আমরা ইসলামি শরীয়াহ মোতাবেক স্বামী-স্ত্রী।

 

বিয়েতে ইলিয়াসের পরিবারের কেউ না আসার বিষয়ে সুবাহ বলেন, এর কারণ হিসেবে ইলিয়াস আমাকে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছিল। আমার পরিবারের অনেকে তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তোমার বাসা থেকে কাউকে আনতেছো না কেন? তখন সে জানায়, ‘কারিনের সঙ্গে যদিও আমার রেজিঃ হয়নি। কিন্তু আমি তাকে ডিএইচএল’র মাধ্যমে সুইডেনে তালাকনামা পাঠিয়েছি।’ যেটা দেখে তাকে আমি বিয়ে করেছিলাম। যদিও তাদের বিয়ের কাগজ ছিল না, তারপরও সে পাঠিয়েছে। আর সেটা যদি ভুয়া হয় তাহলে আমার কিছু করার নেই।

 

সুবাহ বলেন, ইলিয়াস বলেছিল ‘তিন মাসের আগে আমি চাচ্ছি না এই বিয়েটা প্রকাশ হোক। ইলিয়াস তার পরিবারকে বলেছিল, তোমরা যদি আমার বিয়েতে আসো বা এটা নিয়ে যদি জানাজানি হয় তাহলে আমি আইনি জটিলতায় পড়তে পারি।’ আর আমি স্ত্রী হয়ে কখনোই চাইব না আমার স্বামী কখনো আইনি জটিলতায় পড়ুক। আমার সংসারটা ভাঙুক।

 

এদিকে সোমবার (৩ জানুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা করেন সুবাহ।

 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর গত ১ ডিসেম্বর বিয়ে করেন সঙ্গীতশিল্পী ইলিয়াস ও সুবাহ। বিয়ের এক মাস না পেরুতেই তাদের সংসারে অশান্তি বাঁধে।

 

আরআই


মন্তব্য
জেলার খবর