স্থিতিশীলতা নেই লেনদেনের পরিমাণ ও শেয়ার দরে। সূচক যাচ্ছে মিশ্র প্রবণতার মধ্য দিয়েই। বিনিয়োগ তুলে নেওয়াও শুরু করেছেন মৌসুমি ও সুযোগসন্ধানী বিনিয়োগকারীরা। বড় অঙ্কের বিনিয়োগ তুলে নেওয়ায় শেয়ারের নতুন ক্রেতাও সেভাবে মিলছে না। কয়েক মাস ধরেই এ অবস্থা দেশের পুঁজিবাজারে। আর বিনিয়োগকারীরা অর্থ সরিয়ে নেওয়ায় তারল্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ-সংক্রান্ত এক গবেষণাও করেছে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান।
এদিকে পুঁজিবাজার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় নিরাপদ খাত হিসেবে সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে ব্যাংকগুলো। যদিও এখনও বিনিয়োগ সক্ষমতার নিচে রয়েছে অধিকাংশ ব্যাংক।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের শেষ দিকে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই কমে আসায় কর্মতৎপরতা বাড়তে থাকে অর্থনীতির প্রায় সব খাতেই। এর চাপে পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নিতে শুরু করে অনেক বিনিয়োগকারী। এতেই অনেকটা নড়বড়ে হয়ে ওঠে এ বাজার। কখনও সূচকের উত্থান, কখনও পতন হচ্ছে। অথচ এসব বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি গত বছরে সূচক ও লেনদেন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
এদিকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কয়েক মাস ধরে অনেকটা গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের ওপর ভর করে চলছে লেনদেন। লেনদেনের এক-চতুর্থাংশ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত অবদান রাখছে হাতে গোনা পাঁচ-সাতটি প্রতিষ্ঠান। লেনদেনে একক কোম্পানি হিসেবে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে একটি প্রতিষ্ঠান। ৯ ও ১০ জানুয়ারিতে লেনদেনে ২৫ শতাংশ অবদান রেখেছে পাঁচটি কোম্পানি। ৫০ শতাংশের বেশি অবদান রেখেছে শীর্ষ ২০ কোম্পানি। এর মধ্যে একক কোম্পানির তালিকায় সর্বোচ্চ ছয় দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখে একটি কোম্পানি। এ তালিকায় তিন শতাংশের ওপরে অবদান রাখে সাত কোম্পানি, তিন শতাংশের নিচে ও দুই শতাংশের উপরে অবদান রাখে দুটি, বাকি কোম্পানিগুলোর অবদান দুই শতাংশের নিচে। এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর ভর করেই চলছে সূচক ও লেনদেন।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত বছর খাতভিত্তিকের তুলনায় কোম্পানির শেয়ারের প্রতি ঝোঁক ছিল একশ্রেণির বিনিয়োগকারীর। ফলে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বেড়েছে এসব শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। পুঁজিবাজার না বুঝেই যারা বিনিয়োগ করেছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাজার একবার নেতিবাচক ধারায় গেলে আগের অবস্থানে ফিরতে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে। সূচক বাড়লেও আগের অবস্থানে ফিরছে না শেয়ারের দর। পুঁজিবাজারে কোনও সিন্ডিকেটেড বা আর্টিফিশিয়াল ট্রেড হচ্ছে কিনা, সেটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা যাচাই করে দেখতে পারে।
এমকে