হাইকোর্টের রায়ে শিল্পী সমিতির সম্পাদক জায়েদ

০৩ মার্চ ২০২২

বহু নাটকীয়তার পর অবশেষে হাইকোর্টের রায়ে বাংলাদেশে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ ফিরে পেয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। সাধারণ সম্পাদক নিয়ে জায়েদ খানের করা রিটের শুনানি শেষে বুধবার এ রায় দিয়েছে হাইকোর্ট বেঞ্চ। জায়েদ খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি এ তথ্য জানিয়েছেন।

 

তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আকতার জানিয়েছেন, তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই ঘোষণার বিরুদ্ধে আপিল বোর্ডে আবেদন করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আকতার। সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এলে আপিল বোর্ড অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে এফডিসিতে বৈঠকে বসে। বৈঠকের পর আপিল বোর্ডের প্রধান চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণ আকতারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন।

 

তবে জায়েদ খান আপিল বোর্ড আর কার্যকর নেই দাবি করে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বোর্ডের সামনে উপস্থিত হননি। সেই ঘোষণার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

 

পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন করেন নিপুণ আকতার। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সেই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন।

 

১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হলে, চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।

 

২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিপুণ আকতার ১৬৩ ভোট আর জায়েদ খান ১৭৬ ভোট পেয়েছিলেন। নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন।

 

নিপুণ আকতারের যে অভিযোগটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে সেটি হলো এ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করেছেন সেই পীরজাদা শহীদুল হারুনের বিরুদ্ধে। নিপুণ অভিযোগ করেন যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার প্রতি অশালীন মন্তব্য করেছেন।

 

নিপুণ আকতার ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘সকাল বেলা তিনি (পীরজাদা শহীদুল হারুন) আমার দুই গালে দুইটা কিস চাচ্ছে। সেখানে আমার দুইজন নারী প্রার্থী ছিল। আমার উচিত ছিল তার ঐ দুই গালে দুইটা চড় মারা, যেটা আমি করিনি। উনি যখন এ কথাটা বলেছেন, তখন আমার ঐ দুই নারী প্রার্থী দেখেছে। তখনি আমার চড় মেরে নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া উচিত ছিল।’

 

তিনি বলেন, তার মনে হয়েছে আগে এ অভিযোগগুলো সংবাদমাধ্যমে আসা উচিত। নিপুণ আকতার বলেন, বনানী থানায় তিনি একটা জিডি বা সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে।

 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন সংবাদমাধ্যমে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘অভিযোগটা মিথ্যা। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। দুষ্টুমি বা মজা করেও এমন কোনো কথা বলা হয়নি।’

 

অভিনেতা ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে নির্বাচনের দিন ভোটারদের টাকা দিয়ে ভোট কেনার ব্যাপারেও অভিযোগ করেন নিপুণ আকতার।

 

মোবাইলের মেসেঞ্জারে টাকা লেনদেন সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বার্তার স্ক্রিনশট অভিনেত্রী নিপুণ আকতার সাংবাদিকদের দেখিয়েছিলেন ওই সংবাদ সম্মেলনে।

 

এতসব অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের জায়েদ খান বলেছিলেন, ‘সম্পূর্ণ বানোয়াট। একটা ক্লোন করে আমার একটা ছবি দিয়ে একটা প্রোফাইল খুলে স্ক্রিনশটগুলো রেডি করে ছেড়ে দিয়েছেন। আমি খুব দ্রুত ঐদিনই সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি স্ক্রিনশট পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা কাজ করছে। সাইবার ক্রাইম যেন খুঁজে বের করে কারা আসলেই এ কাজগুলো করেছে। প্রয়োজনে আমি মামলা পর্যন্ত করবো।’


মন্তব্য
জেলার খবর