বেশ কয়েকদিনই হচ্ছে দরপতনের মধ্যে দিয়ে চলছে দেশের শেয়ার বাজার। মন্দাভাব দেখা দিয়েছে লেনদেনেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এ বাজারের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী। প্রতিদিনই লেনদেন কমতে থাকায় শেয়ার বাজারে কমছে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ।
পরিস্থিতি কতটা নাজুক, সেটা বোঝা যায়- দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত কয়েক সপ্তাহ হওয়া লেনদেন পরিস্থিতির দিকে তাকালে। হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন এক সপ্তাহের ব্যবধানে নেমে এসেছে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকায়। আর টানা তিন সপ্তাহে বাজার থেকে হাওয়া হয়ে গেছে ২৮ হাজার ৩২৫ কোটি টাকার বাজার মূলধন। গত ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে ৩ মার্চ, এ দিন লেনদেন নেমেছে ৬৪৫ কোটি টাকায়। এর আগে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছিল ৬০৩ কোটি টাকা, গত ১৮ এপ্রিল।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ কয়েক দিনে ২০–২৫ শতাংশের বেশি কমেছে অনেক শেয়ারের দাম । এতে বেশি বিপদে পড়েছেন ঋণ করে বিনিয়োগে জড়িতরা। কারণ তারা পুঁজি হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন- লোকসানে শেয়ার বিক্রি নিয়ে।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, তিন সপ্তাহে ডিএসইতে বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। কমেছে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণ। গেল সপ্তাহের লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৭ কোটি টাকায়। এর আগের সপ্তাহে এর পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। আগের দুই সপ্তাহে কমেছিল ১৬ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকার বাজার মূলধন। গত সপ্তাহে দাম কমেছে ৩১৯টি কোম্পানির শেয়ারের। বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ৫৫টির, আর ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তিন সূচকের মধ্যে ডিএসইএক্স কমেছে ১৪২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট, আগের দু’সপ্তাহেও কমেছিল এটা- ১৫১ দশমিক ৯২ ও ৯৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। একইভাবে তিন সপ্তাহে ডিএসই-৩০ সূচক ৫২ দশমিক শূণ্য ৪, ৫৮ দশমিক ৮৭ ও ২৩ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট কমেছে । আর শরিয়াহ্ সূচকটি ক্রমান্বয়ে ৩৩ দশমিক ৭৩, ৩২ দশমিক ৪২ ও ৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে ।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৪৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেন হয়েছে মোট ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে এর পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা।
এমকে