পাবনা সংবাদদাতা
জন্মের পরপরেই বিষয়টি ধরা পড়ে, বয়সের সঙ্গে বাড়তে থাকে মাথার আকৃতি। চিকিৎসকের ভাষায় এটা হাইড্রোসেফালাস রোগ, ব্যয়বহুল চিকিৎসা। তারপরও সামর্থ আর ঋণের টাকায় চেষ্টা চালিয়েছেন ছেলেকে সুস্থ করে তোলার। কিন্তু টাকার সংস্থানের অভাবে হাল ছেড়ে দিয়েছেন রনির বাবা, মনোকষ্ট আর ছেলের অসুস্থতা নিয়ে হা-পিত্যেশের শেষ নেই তার মায়ের।
মাস তেরোর রনির পুরো নাম নাঈম হোসেন রনি। পাবনার চাটমোহরের কাটেঙ্গা উত্তরপাড়া গ্রামের তার বাড়ি। বাবার নাম নাজমুল আলী, পেশায় তিনি দিনমজুর। স্থানীয় একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম হয় তার। আর গর্ভে থাকতেই আলট্রসনোগ্রাফির মাধ্যমে অস্বাভাবিকতা বুঝতে পারেন চিকিৎসক।
রনি মা পারভীন আরা, বলছিলেন- আমাদের কপাল মন্দ। গরীবের ঘরে ‘বড়লোকি’ রোগ দিয়েছেন আল্লাহ্। ছেলের চিকিৎসার জন্য সবই করেছি, যতটুকু সাধ্যে কুলায়। গরু আর গহনা বিক্রি করছি, এনজিও থেকে ঋণও নিয়েছি, এই পর্যন্ত দুই লাখের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু রোগ তো সারছে না, বরং মাথার আকৃতি আগের চেয়ে বেড়েছে।
পারভীন আরা আরও বলেন, খারাপ তো লাগেই, কিন্তু কী করবো? প্রতিবেশির শিশুরা যখন হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তখন আমার ছেলেকে কারও না কারও কোলে থাকতে হয়। আর রাতের বেলায় অন্য শিশুরা যখন ঘুমায়, তখন ছেলেটি আমার কান্নাকাটি করে অসহ্য যন্ত্রণায়। তখনই বেশি খারাপ লাগে।
পারভীন আরা জানান, সর্বশেষ নাটোরের গুরুদাসপুরের একটি বে-সরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে ডাক্তার আমিনুল ইসলাম সোহেল দেখেছেন। তিনি বলেছেন ছেলে আমার হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত। দ্রুত ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা খরচও ব্যয়বহুল। ছেলের চিকিৎসার জন্য সমাজের বৃত্তশালী মানবিক মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন রনির মা।